সোনারগাঁয়ের খবর

সোনারগাঁয়ে নয়ন হত্যা মামলার আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

নিজস্ব সংবাদদাতা, সোনারগাঁ টাইমস২৪ ডটকম :

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ইউপি নির্বাচনী শত্রুতার জের ধরে নয়ন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেছে নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী। মঙ্গলবার বিকেলে সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করা হয়।

মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন, নিহত নয়ন মিয়ার বাবা আলম মিয়া, মা রহিমা বেগম, স্ত্রী মানছুরা, ভাই ওমর ফারুকসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ। মানববন্ধন কর্মসূচীতে নিহতের বাবা আলম মিয়া তার বক্তব্যে বলেন, আমার ছেলে নয়নকে সনমান্দি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের নির্বাচিত প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন ও তার লোকজন হত্যা করে লাশ গত শনিবার সকালে সাজালেরকান্দী এলাকা ব্রীজের পাশে লাশ ফেলে যায়। দেলোয়ারের ঘর থেকে নয়নের রক্তমাখা লুঙ্গি উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, হত্যাকান্ডের পর ঘটনাস্থল থেকে দেলোয়ারকে পুলিশ আটক করেছে। দেলোয়ার এসপি নাবিলার আত্মীয়। আটকের পর সোনারগাঁয়ের জামপুর ইউনিয়নের মাঝেরচর এলাকার বাসিন্দা ও ঢাকা হেডকোয়াটারে কর্মরত এসপি (পুলিশ সুপার) নাবিলা পুলিশকে ফোন দিয়ে দোলোয়ারকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। শুধু তাই নয় বাদির দায়ের করা অভিযোগে নাম অর্ন্তভূক্ত ছিল। কিন্তু রাত ৩ টা পর্যন্ত বসিয়ে রেখে আমাদের বাড়ি চলে যেতে বলে। বাড়ি চলে আসার পর সকালে নারায়ণগঞ্জ আদালতে গিয়ে দেখি মামলার এজহারে কারো নাম অর্ন্তভূক্ত নাই। অজ্ঞাত হিসেবে মামলা রুজু হয়েছে। এসপি নাবিলার প্রভাবে সোনারগাঁ থানা পুলিশ দেলোয়ারকে বাঁচাতে এ এজহার পরিবর্তন করা হয়েছে। আমার ছেলের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দাবি করছি।

নিহতের মা রহিমা বেগম বলেন, নির্বাচনের আগে থেকেই আমার দুই ছেলেকে দেলোয়ার ও তার লোকজন বাড়িতে গিয়ে খুঁজে হুমকি দিয়ে এসেছে। হত্যাকান্ডের আগের দিনও বাড়িতে খুঁজে এসেছে। পরদিন আমার ছেলের লাশ পাওয়া যায়।

মারুবদী গ্রামের ওমর ফারুক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দেলোয়ার বাহিনী এ অঞ্চলে মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে আসছে। এদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই হামলা ও মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেয়। দেলোয়ারের বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় ৯টি মামলা ও দুটি জিডি রয়েছে।

উল্লেখ্য, উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়ন পরিষদে ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে নির্বাচিত ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন ও সাবেক সদস্য মো. ফিরোজ আহমেদ প্রতিদ্বন্দিতা করেন। নিহত নয়ন সনমান্দি ইউনিয়নের সাবেক সদস্য মোঃ ফিরোজ আহমেদের সমর্থক ছিলেন। নির্বাচনে ফিরোজ আহমেদ পরাজিত হন। পরাজিত প্রার্থীর সমর্থক নয়নকে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র ও টেঁটাবিদ্ধ করে হত্যা করে। হত্যাকান্ডের পর রাতের আঁধারে সনমান্দী ইউনিয়নের সাজালের কান্দী ফতেহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে নয়নের লাশ ফেলে রাখে। ১ লা জানুয়ারী সকালে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, নয়ন হত্যা মামলা কারো প্রভাবে রুজু হয়নি। বাদির দেওয়া এজহারটি মামলা গ্রহন করা হয়েছে।

Related Articles

Back to top button